বাঁটুল দি গ্রেট

বাঁটুল দি গ্রেট, বাংলা কমিকসের জগতের একটি চির পরিচিত নাম|বাংলা কমিকস শিল্পী নারায়ন দেবনাথের অমর সৃষ্টি বাঁটুল দি গ্রেট প্রথম 'শুকতারা' নামক বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্য ভিত্তিক মাসিক পত্রিকায় প্রথম আবির্ভুত হয়, তার পরে এখনো 'শুকতারার' প্রতি সংখ্যায় আমরা প্রতি মাসে বাঁটুলএর নানা কীর্তি কাহিনী পড়ে থাকি | বাঁটুলএর ব্যাপারে নতুন করে আর কিচ্ছু বলার নেই, কারণ পশ্চিম বঙ্গের শুধু ছোটরাই নয়, বড় পাঠকদের কাছেও বাঁটুল সমান ভাবে জনপ্রিয়| 'শুকতারার' প্রতি মাসিক বা শারদীয়া সংখ্যা ছাড়াও 'দেব সাহিত্য কুটির' বাঁটুলকে বই আকারে প্রকাশ করেছে - আর বাঁটুলকে নিয়ে কার্টুন সিরিয়াল টিভিতে এসেছে|

গোড়ার কথা

নারায়ন দেবনাথের লেখা ও আঁকা প্রথম রঙ্গিন কমিকস হলো বাঁটুল দি গ্রেট| একদিন উনি যখন কলেজ স্ট্রিট থেকে ফিরছিলেন তখনই ওনার মাথায় প্রথম একজন সুপার হিরো তৈরি করার চিন্তা আসে - বাঁটুলের নাম ও চেহারার কথাও সেই সময়ই উনি ভেবে থাকেন| তবে বাঁটুলের ভবিষ্যত বা তার শক্তি সামর্থ্য নিয়ে উনি সেসময়ে আলাদা করে কিছু ভাবেন নি|

১৯৭১ সালের ইন্দো-পাকিস্থান যুদ্ধ যা বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধ নামে বিখ্যাত - সেই সময়ে মানুষের মনে আশা জাগানোর কারণে প্রকাশক ও সম্পাদকের অনুরোধে বাঁটুলের সর্বজয়ী শক্তির প্রথম প্রকাশ ঘটে| নানান আইন ঘটিত কারণে নারায়ন দেবনাথের মনে প্রথমে সামান্য সংশয় থাকলেও তারপর থেকে বাঁটুল ট্যাংক, এরোপ্লেন ও মিসাইলের সাথেও সমানে লড়ে যেতে থাকে| সুপারম্যানের মত বাঁটুলের গায়ে লেগেও বন্দুকের গুলি ছিটকে যায়|

তথ্যসুত্র : উইকিপিডিয়া

আমাদের বাঁটুল

বাঁটুল সুপারম্যানের মত একটি চরিত্র - পেশীবহুল চেহারা ও অমিত শক্তির অধিকারী| বাঁটুল এতই শক্তিশালী যে সে চলন্ত ট্রেন থামিয়ে দিতে পারে, ছুটে গিয়ে দেওয়াল ভেঙ্গে গুর করে দিতে পারে, খালি হাতে হাঙ্গর বা তিমি মাছের সাথেও মহড়া নিতে পারে এবং তার গায়ে লেগে বন্দুকের গুলি বা ট্যাংকের গোলা ছিটকে চলে যায় | তার এই অসীম শক্তির কারণে মাঝে মাঝে তাকে নানা ঝামেলাতেও জড়িয়ে পড়তে হয়, কারণ কোনো যন্ত্র-পাতি ব্যবহার করার সময়ে বা দরজা বা আলমারি খুলতে গেলে তার হাতের 'কড়া মোলায়েম' চাপে সেগুলির বেশির ভাগই ভেঙ্গে-চুরে যায়|

আর সবাই

বাঁটুলের গল্পে আর যাদেরকে আমরা দেখতে পাই তাদের ভিতরে 'দুই বিচ্ছু' মা দুর্গার পায়ের তলার অসুরের মতই জায়গা নিয়ে আছে - কারণ বেশিরভাগ গল্পেই প্রধান ভিলেন বাচ্চুবিচ্ছু নামের এই দুই খুদে শয়তান| স্কুল ফাকি দিতে এরা সব কিছু করতে পারে, এমনকি প্রয়োজনে ডিনামাইট দিয়ে এরা স্কুল-বাড়ি উড়িয়েও দিতে পারে| মাঝে মাঝেই এরা নানা দুস্কৃতির সাথে হাত মেলায় নিজেদের টু-পাইস কামনর জন্য বা নেহাতই বাঁটুল কে জব্দ করার জন্য| কিন্তু সব গল্পেই যেমন হয় - এরা বাঁটুলের শক্তির কাছে শায়েস্তা হয়ে যায়|

এছাড়াও বাঁটুলের আর একটি খুদে বন্ধু আছে - লম্বকর্ণ| লম্বকর্ণের কান দুটি স্বাভাবিকের থেকে একটু বড়সড়ো আর ও বহু দুরের আওয়াজও শুনতে পায় | বাঁটুলের একটি পিসি আছে যিনি বাঁটুলের জন্য রান্না করে দেন , এবং কয়েকটি গল্পে আমরা ছোটখাটো চেহারার একজন দাদামশায়কেও দেখেছি |

বাঁটুলের পোষা কুকুরের নাম কি? ভেদো | আর বাঁটুলের একটি পোষা উট-পাখিও আছে - যার নাম উটো|

বাঁটুল দি গ্রেটের সব কমিকস